অংশ নেয়া, নাগরিকসাধারণের কল্যাণে বিকাশমান প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো, প্রতিষ্ঠান ও বাজারের আধুনিকায়নের জন্য আইসিটি ব্যবহার করছে। বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশ আইসিটি সম্ভাবনাকে স্বীকার করে একটি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক মুক্তির উপায় এবং সেই সাথে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা ও মানব উন্নয়নের উপায় হিসেবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে আইসিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সক্ষমশক্তি এই উপলব্ধি নতুন কিছু নয়। এক্ষেত্রে প্রথমদিকের উদ্যোগ ছিল আইসিটি খাতকে একটি রফতানি খাত হিসেবে ও আইসিটি গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা। ১৯৯১ সালের দিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জাতিসংঘের ইউএনডিপি ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি)-এর সহায়তায় আইসিটির বাজার সম্ভাবনা উদঘাটনের উদ্যোগ নেয়। বেশ কয়েকটি বৈঠক ও সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে মুখ্য বিষয়াবলী চিহ্নিত করা হয় এবং সংশোধনমূলক পদক্ষেপের পরামর্শ দেয়া হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রকল্পের আওতায় ইউএনডিপি ও ইউনিডার সহযোগিতায় ১৯৯২ সালে সমস্যার ক্ষেত্রগুলোর চিহ্নিত করা ও বাংলাদেশের আইসিটি রফতানির সুপারিশমালা তৈরির কাজে নিয়োজিত হয়।
এর মধ্যে একটি বহুল স্বীকৃত উদ্যোগ এক্ষেত্রে আসে ১৯৯৭ সালে। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তখন একটি কমিটি গঠন করা হয় বাংলাদেশ রফতানিমুখী সফটওয়্যার শিল্পের রফতানি সম্ভাবনা উদঘাটনের জন্য। এ কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব ছিল সরকার, শিল্প খাত ও শিক্ষাবিদদের। এ কমিটি ১৯৯৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এর প্রতিবেদন পেশ করে। এ কমিটির বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়, যা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের আইসিটির আধুনিক রূপ গড়ে তোলে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর প্রতিষ্ঠা, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আইসিটি টাস্ক ফোর্স গঠন, আইসিটি পণ্য আমদানির ওপর সরকারি লেভি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নামিয়ে আনা ইত্যাদির উল্লেখ ছিল উল্লিখিত রিপোর্টে।
কমিটির রিপোর্ট সচরাচর জেআরসি রিপোর্ট নামেই আখ্যায়িত হয়। এই রিপোর্ট নাগরিকসাধারণ ও সরকারের সাধারণ ভাবনা-চিন্তাকেই ধারণ করে, যা পরবর্তীতে আসা সরকারগুলোর মধ্যে আইসিটি সম্পর্কে নবায়িত রাজনৈতিক প্রতিশ্র“তির জন্ম দিয়েছিল।
বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন কর্মসূচীতে আইসিটি ব্যবহার হচ্ছে একটি তুলনামূলক নতুন ধারণা। ২০০০ সালে আইসিটি উঠে আসে এক নতুন অভিক্ষিপ্তাবস্থায়। তখন জাতিসংঘ ও শিল্পায়িত দেশসমূহের জোট জি-৮ ICT for Development (ICT4D)-কে বিশ্ব উন্নয়নের একটি অগ্রাধিকার হিসেবে ধরে নিয়ে ‘everyone, everywhere, should be enable to participate in... the benefits of the global information society’ ঘোষণা দিয়ে। ইউএনডিপির পরবর্তী ২০০১ সালের Making New Technologies Work for Human Development শীর্ষক মানবউন্নয়ন প্রতিবেদন ছিল বিশ্বের নাগরিকসাধারণের কল্যাণে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার উদঘাটনে একটি পথনির্দেশক উদ্যোগ।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS